বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন

জেলার মামুনুর রশিদের সম্পদের পাহাড়

জেলার মামুনুর রশিদের সম্পদের পাহাড়

জাহাঙ্গীর আলম তপু : নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে কর্মরত জেলার মামুনুর রশিদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে চাকুরীর সুবাদে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। এত সম্পদের মালিক তিনি কিভাবে হলেন তা অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। চাকুরী পাওয়ার পর থেকে কর্ম ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অপরাধের মাফিয়া হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। এপর্যন্ত তিনি যে কারাগারে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন সব জায়গায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

বিগত দিনে নিজেকে জড়িয়েছেন অনিয়ম-দুর্নীতি, কারাগাওে নিম্মমানের খাবার সরবরাহ, বাইরে এবং ভিতর কে›টিনে অতিরিক্ত জিনিসের দাম, কারাগাওে মাদক প্রবেশ, কারা হাসপাতালে মাদক ব্যবসায়ীদেও থাকার ব্যবস্থাসহ একাধিক অভিযোগ তদন্ত চলছে। আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগের উৎস পদস্থ নেতাদের সাথে ওঠাবসা ছিল তার জেলার মামুনুর রশিদের। মামুনুর রশিদ ঝিনাইদহ শহরের বাইপাস ভুটিয়ারগাতি, হাটগোপালপুর, শৈলুপার আবাইপুর ইউনিয়নের কুমিড়াদহ গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন প্রায় ৩০ বিঘা জমি। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা বলে জানাগেছে। এছাড়াও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারে দোতলা বাড়িসহ প্রায় ৩ কোটি টাকার জমি কিনতে বায়না করেছেন তিনি।

শুধু ঝিনাইদহে নয়, যশোরে তার আত্নীয় স্বজন ও স্ত্রীর নামে নোট ও বিভিন্ন স্থাপনা কিনেছেন যার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। ফরিদপুরে তার নিজ গ্রাম সহ মামুনুর রশীদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। একজন জেলার হয়ে কিভাবে এত সম্পত্তির মালিক হয়েছেন মামুনুর এই প্রশ্নের আশ্চর্য বনে গেছেন তার নিজ গ্রাম সহ তার চাকুরীরত দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরাও। জেলারের বিষয়ে নিজ গ্রামে খোঁজখবর নিতে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার পারিবারিক এক আত্মীয় জানান, তিনি ২০১২ সালে ঝিনাইদহের ডেপুটি জেলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ওই সময় সদর উপজেলার বাকড়ি গ্রামে তার বড় মামার শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় সম্পর্কে দেলোয়ার হোসেন দুর্লভ নামের এক দালালের সাথে পরিচয় হয় মামুনের। সেই দালাল দুর্লভের মাধ্যমে ঝিনাইদহ শহরের বাইপাস, ভুটিয়ারগাতি, হাটগোপালপুরে কয়েক কোটি টাকার জমি কিনেন। সদর উপজেলার হাটগোপালপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেনের ১২ শতক জমি, মার্কেটসহ দোতলা বাড়ি ক্রয় করার জন্য ইতোমধ্যেই বায়না দিয়েছেন, যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি টাকা। এছাড়াও যশোর, ফরিদপুর, কুমিল্লায়ও তার নামে-বেনামে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়াও তার নিকটস্থ আরেক আত্মীয়র সূত্রে জানা গেছে, তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ভূমি ও মাদক ব্যবসায়ী দুর্লভ ও তার স্ত্রীর নামেও জেলার মামুনুরের সম্পত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে। জেলার মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে অবৈধ অর্জিত সম্পদ ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে, তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2025 Protidiner Kagoj |